‘রহস্য মানব’ আজিজ মোহাম্মদ ভাই!
1 min read

‘রহস্য মানব’ আজিজ মোহাম্মদ ভাই!

আজিজ মোহাম্মদ ভাই, পরিচিত চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী হিসেবে। তাকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য। নামের সঙ্গে ‘ভাই’ শব্দটি এই রহস্যময়তাকে আরো আলোচনায় নিয়ে এসেছে। পারিবারিক এ পদবি তিনি পেয়েছেন পিতা মোহাম্মদ ভাই এর কাছ থেকে। যুবক বয়স থেকেই প্লে-বয় হিসেবে নাম ছড়িয়ে পড়ে, তৈরি করেন নানা বিতর্ক, আলোচনা। মুখরোচক অনেক গল্পও রয়েছে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে নিয়ে।

অভিনেতা হত্যা ও নায়িকাদের নিয়ে কেলেঙ্কারিসহ চলচ্চিত্র জগতের সব অপরাধে যেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নাম। এছাড়াও রয়েছে মাদক পাচারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অপরাধের অভিযোগ। তবে এসব অভিযোগের কোনো প্রমাণ না থাকায় সবসময় তিনি থেকেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

বর্তমানে থাইল্যান্ডে প্রবাসী আজিজ মোহাম্মদ ভাই। বেশ কিছুদিন আলোচনার বাইরে থাকলেও, সম্প্রতি ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে আবারও আলোচনায় এসেছেন রহস্যময় এ ব্যক্তি।

রোববার (২৮ অক্টোবর) আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের মালিকানাধীন গুলশান-২-এর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। বাড়িটির ছাদে মিনি বার ও ক্যাসিনোর সন্ধান পায়। এছাড়া বিপুল পরিমাণে বিদেশি নামি-দামী ব্র্যান্ডের মদ, গাঁজা, সীসার উপকরণ এবং ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করা হয়।

আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ঠিকুজি অনুসন্ধানে জানা যায়, শিয়া মুসলিম ও প্রিন্স করিম আগা খানের ইসমাইলি সম্প্রদায়ভুক্ত তারা। মোহাম্মদ ভাই পরিবার নিয়ে ভারতের গুজরাট থেকে বাংলাদেশে আসেন। ধণাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় বসবাস শুরু করে।

পারিবারিক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র জগতে ঢুকে পড়েন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। অলিম্পিক ব্যাটারি, বেলপেন অলিম্পিক ব্রেড, বিস্কুট ইত্যাদি ছিল তাদের পারিবারিক ব্যবসা।

আজিজ মোহম্মদ ভাই এরশাদ জামানায় লাইমলাইটে আসেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেনকে ঢাকায় এনে। এক সময়ের টালিগঞ্জের হার্টথ্রব এ নায়িকা বহুবার ঢাকা আসেন।

কথিত আছে, সার্ক চেম্বারের আজীবন সদস্য আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ঘনিষ্ঠতা আছে উপমহাদেশের কুখ্যাত ডন দাউদ ইব্রাহিমের সাথে। তার পরামর্শে আজিজ মোহাম্মদ ঢুকে পড়েন সিনেমা ব্যবসায়।

তার প্রোডাক্টশন হাউস এমবি ফিল্মস ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছে। শুরুতেই নায়িকাদের নিয়ে মুখরোচক খবরে আসে এই প্রযোজকের নাম। আশির দশকের বাংলা সিনেমার নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে আসে তার নাম। এই হত্যাকাণ্ডটি বনানীর কামাল আতার্তুক সড়কের তৎকালীন ট্রাম্পস ক্লাবে সংঘটিত হয়।

জনশ্রুতি আছে, জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুতেও তাঁর হাত রয়েছে। এ নিয়ে মোহাম্মদ আজিজ ভাইকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

জানা যায়, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে নারীঘটিত বিতর্কে জড়িয়ে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তবে তাকে মুক্ত করতে ইসমাইলি সম্প্রদায়ের ধর্মীও নেতা প্রিন্স করিম আগা খান নিজেই বাংলাদেশে এসেছিলেন।

তবে এতসব অভিযোগে যার নামে, তার এসব বিষয়ে নেই কোনো ভ্রুক্ষেপ! দিব্যি থাইল্যান্ডে বসে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুরে রয়েছে তার হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসা। গুলশানের বাসা দেখাশুনা করেন তার ভাই-বোন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *