
ভারতে ৬ বছর নির্বাসিত জীবন : কবে ফিরতে পারবেন সালাহউদ্দিন আহমদ
ডেস্ক রিপোর্ট
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
‘আমি তো সংসার-সন্তান সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। উনার ব্যাপারে পার্টির লোকজন কী চিন্তা করছেন এখনও জানি না। তিনি তো দলের নেতা, তারা নিশ্চয়ই চিন্তা করছেন’- বলছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী এড. হাসিনা আহমদ।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে তিনি জাতীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
২০১৫ সালের ১১ মে থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। স্বাভাবিক জীবনের বাইরে তার ছয়টি বছর কেটে গেছে সেখানে।
স্বামীর বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে হাসিনা আহমদ বলেন, ‘কোনও আপডেট নেই। যে অবস্থায় ছিল তেমনই আছে। আমরা আপিল করেছিলাম, কিন্তু এখনও শুনানি শুরু হয়নি।’
সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রীর আক্ষেপ, ‘করার কিছু নেই আর। এমন কোনও চেষ্টা তো বাকি নেই যা করিনি। আল্লাহ ভালো জানেন, সামনে কী অপেক্ষা করছে।’
হাসিনা আহমদ উল্লেখ করেন, সালাহউদ্দিনের শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। তিনি এখনও অসুস্থ। গত বছরের মে মাসে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর ভাষ্য ছিল, দেশে ফেরার চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই তা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
পারিবারিক সূত্র মতে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে ভাড়া করা একটি কটেজে একাকী জীবন কাটছে সালাহউদ্দিন আহমদের। তাঁর চিকিৎসা ও জীবনযাপনের আর্থিক ব্যয়ের পুরো সহায়তা করা হচ্ছে পারিবারিকভাবে।
বিএনপির দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষনেতৃত্বের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। মূলতঃ এ কারণেই দলীয়ভাবে তাঁর মুক্তির বিষয়ে কোনও ধরনের উদ্যোগ নেই। যদিও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে সব সময়ই গুরুত্ব পেয়েছেন তিনি।
১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ২০০১ সালে কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার-০১ (চকরিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ভারতে আটক হওয়ার সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। সালাহউদ্দিন আহমদের নিখোঁজের পর সন্ধান চেয়ে ২০১৫ সালের ১০ মে দুপুরে একটি বিবৃতি দেন খালেদা জিয়া। পরদিন (১১ মে) তার খোঁজ পাওয়া যায়। পরে শিলংয়ে থাকা অবস্থাতেই ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর তাঁকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত করেন খালেদা জিয়া। যদিও দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের এই সদস্যের মুক্তি নিয়ে বিএনপির ভেতরে-বাইরে কোনও উদ্যোগ নেই। এমনকি দলের ফরেন রিলেশন্স কমিটিও এটি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, ‘দলীয়ভাবে যে একেবারেই উদ্যোগ নেয়া হয়নি তা নয়। আর উদ্যোগ নিলেও কী হবে। ভারত যদি রাজি না হয়, তাহলে কীভাবে মুক্তি পাবেন?’
সেক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে দলীয়ভাবে যোগাযোগ করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির প্রবীণ এই নেতার মন্তব্য, ‘সরকারের পক্ষ থেকে কী বলা হবে তা আমরা ভালো করেই জানি। তবু সালাহউদ্দিন আহমদের ব্যাপারটি আলোচনার দাবি রাখে।’
এ প্রসঙ্গে হাসিনা আহমদের আশা, ‘কিছু একটা পদক্ষেপ তো দল নেবে। তবে এখনও সে রকম কিছু জানি না।’
সুত্র : বাংলা ট্রিবিউন