
সিনহা হত্যাকান্ড ছিল ‘পূর্বপরিকল্পিত’, আদালতের পর্যবেক্ষণ
বিশেষ প্রতিবেদক, কক্সবাজার
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় পাঠকালে আদালতের বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত।’
সোমবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আলোচিত এই মামলার রায় পড়া শুরু করেন। কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ আসামিকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
কঠোর নিরাপত্তায় সোমবার বেলা ২টার দিকে ১৫ আসামিকে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাসে নেয়া হয়। এর আগে সকালে আসামিদের আনার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দুপুরে করা হয়।
কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সেলিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের চারপাশে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ ও তিনটি সংস্থার সমন্বয়ে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়েছে।’
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে গুলিতে নৃশংসভাবে খুন হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে নানা অপচেষ্টা চালানো হলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে জড়িতদের নাম এবং তাদের নৃশংসতার কাহিনী।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অন্যদিকে বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে বাদীপক্ষ।’ তিনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রায় পড়া শেষে বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শকক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়াও ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও ৭ জনকে বেখসুর খালাস দেয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত করেন কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর দুই কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার মো. জামিলুল হক ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ মামলায় মোট ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়। তাদের মধ্যে ৬৫ জন ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদালতে সাক্ষ্য দেন।