‘পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেব, সম্পাদককে গুলি করে মেরে ফেলব’

সারাদেশ ডেস্ক
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকা কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে মহড়া শেষে নগরের চাষাঢ়া প্রেসিডেন্ট রোডের ‘দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ’ কার্যালয়ে এই হামলা চালায়। ওই সময় কার্যালয়ে থাকা বেশ ক’জন সাংবাদিক ও কর্মীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলা এই হামলার পর হামলাকারীরা অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। অফিসের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইস ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অফিসের প্রহরী হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ শতাধিক লোক অফিসে ঢুকতে চায়। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে মেরে ফেলবে হুমকি দিয়ে সবাই ঢুকে পড়ে।’
অফিসে থাকা দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রতিবেদক আরিফ হোসাইন কনক বলেন, ‘দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে মোটরসাইকেলে চেপে শতাধিক লোক অফিসের নিচে আসে। পরে তারা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠে। অফিসে ঢুকেই আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে।’
তিনি বলেন, গত শুক্রবার দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রধান সংবাদ ‘যা ছিল খসড়া চার্জশিটে’ সংবাদটি কেন প্রকাশ করা হয়েছে, তারা তা জানতে চায়। তারা বলতে থাকে, ‘তোরা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে নিউজ করস। কালকের মধ্যে পেপারে এর জন্য ক্ষমা না চাইলে পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেব ও সম্পাদককে গুলি করে মেরে ফেলব।’
এদিকে ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের মধ্যে নাসির, আক্তার নুর, সুমন, সানি, ইসমাইল, আন্নান, কাজল, রুবেল, সিনাফি, রবিন, মনির, লক্ষণ, কৃষ্ণা, রাতুলকে চিহ্নিত করতে পেরেছে দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানিয়েছে, এদের মধ্যে নাসির ও আক্তার নুর একাধিকবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিল।
আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, অফিসে হামলার আগে শতাধিক লোক মোটরসাইকেলে চেপে নগরে মহড়া দেয়। ওই মহড়া শেষ করেই সময়ের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে হানা দেয় তারা।
এ ব্যাপারে সময়ের নারায়ণগঞ্জের প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, ত্বকী হত্যা মামলা নিয়ে র্যাবের একটি খসড়া চার্জশিটের সংবাদ গত শুক্রবার প্রকাশ হয়। সেই খসড়া চার্জশিট ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করে। সেটাই হুবহু তুলে ধরা হয়। সেখানে আমাদের নিজেদের কোনো বক্তব্য ছিল না।
তিনি বলেন, তারা যেভাবে অফিসে হামলা করেছে, তা ন্যক্কারজনক। তারা অফিসের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিন ও একটি পিসির হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছে। ভাঙচুর করেছে ক্যামেরা।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ, অফিসের লোকজনদের সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত হামলার ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে পত্রিকা থেকে তাদের জানানো হয়েছে এই ঘটনায় তারা মামলা করবেন।
এই পোর্টালে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।