প্রেমিককে বিয়ে করতে দুই ছেলেকে ‘বিষ মেশানো মিষ্টি’ খাইয়ে হত্যা, অনুতপ্ত সেই মা!
1 min read

প্রেমিককে বিয়ে করতে দুই ছেলেকে ‘বিষ মেশানো মিষ্টি’ খাইয়ে হত্যা, অনুতপ্ত সেই মা!

সারাদেশ ডেস্ক
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম

সম্প্রতি ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ দুই শিশুর মৃত্যুর খবরে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরও শুরু করে তদন্ত। পুলিশও নামে মাঠে। শেষপর্যন্ত বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য। প্রেমিককে বিয়ে করে নতুন সংসারের আশায় দুই ছেলেকে বিষ খাইয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে নাপা সিরাপের ‘নাটক’ সাজিয়েছেন মা!

এরই মধ্যে হত্যায় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মা রিমা বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাকিম বেগম আরেফিন আহমেদ হ্যাপির কাছে জবানবন্দি দেন। এসময় দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় অনুতপ্ত হন রিমা বেগম।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার সময় রিমা বেগমকে অনেকটা বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত।

রিমা এও জানিয়েছেন- তার পরকীয়া প্রেমিকের প্ররোচনায় এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এর আগে ১০ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত দুই শিশুর নাম ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫)।

এদিকে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, শিশুদের বাবা ইসমাঈল হোসেন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি সিলেটে একটি ইটভাটায় শ্রমিকদের গাড়ির টিকিট বিলির কাজ করতেন। প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে করেন রিমাকে। তাদের সংসারে তিন সন্তান রয়েছে।

অপরদিকে সংসারের অসচ্ছলতার কারণে চাতালকলে কাজ শুরু করেন রিমা। সেখানে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কলের সর্দার সফিউল্লাহর সঙ্গে। সফিউল্লাহ শর্ত দেন দুই সন্তানকে সরিয়ে ফেললে রিমাকে বিয়ে করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন বিকেলে রিমাকে পাঁচটি মিষ্টি দিয়ে আসেন সফিউল্লাহ। সেই সঙ্গে বলে আসেন- এই মিষ্টি সন্তানদের খাওয়ানোর পর রিমাকে আর কিছু করতে হবে না।

এরপর রিমা তার দুই ছেলেকে সেই মিষ্টি খাওয়ান। এদিন রিমার সঙ্গে সফিউল্লাহর প্রায় ১৫ বার মোবাইলে কথা হয়।

এদিকে ওই শিশুদের জ্বর ছিল। তাই রিমা নাপা খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা সাজাতে তার শাশুড়িকে দিয়ে ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ আনান। সেই সিরাপ দুই শিশুকে এক চামচ করে খাওয়ান। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুদের মুখ দিয়ে লালা বের হয়। এরপর তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ঘটনার পর তদন্ত কমিটি করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তারা ওই দুই শিশুর বাড়ি যায়। রিমা বেগম তদন্ত কমিটির কাছে বলেছিলেন, নাপা সিরাপ এক চামচ খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

মায়ের এমন বক্তব্যে তদন্ত কমিটির প্রধান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আকিব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা বলছে, ওষুধ খাওয়ানোর পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওষুধে কী এমন উপাদান ছিল- যেটি খাওয়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে রিঅ্যাকশন করলো। এটি আসলে রহস্যজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *