
সেন্টমার্টিনে ডুবে গেল ১৫ ট্রলার, উড়ে গেছে ঘরের চাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ (কক্সবাজার)
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’র প্রভাবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইছে কক্সবাজারের বিভিন্ন অঞ্চলে। একই সাথে নাফ-নদীসহ সাগরের পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে উপকুলীয় এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
তবে ইতোমধ্যেই ঢেউয়ের আঘাতে সেন্টমার্টিনে নোঙরে থাকা ১৫টি ফ্রিশিং ট্রলার সাগরে ডুবে গেছে এবং দ্বীপে বেশকিছু ঘরের টিন-চাল উড়ে গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ এরফানুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভৌগোলিক কারণে সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এই উপজেলায় ৭৮টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেলগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপের জনসাধারণকে ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। দূর্যোগপরবর্তী পরিস্থিতির জন্য শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ঘূণিঝড় সিত্রাং’র প্রভাবে সকাল থেকে প্রচণ্ড হাওয়া শুরু হয়েছে। তবে ভাটার কারণে সাগরে পানি একটু কমেছে। ইতোমধ্যে ঢেউয়ের আঘাতে জেটিতে নোঙরে থাকা ১৫টি ফিশিং ট্রলার ডুবে গেছে। তার মধ্যে দুটি ট্রলার সাগরে ভেসে গেছে। উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে দ্বীপের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য তাদের পক্ষ থেকে মাইকিং চলছে। ইতোমধ্যে কিছু ঘরবাড়ির টিন-চাল উড়ে গেছে বলেও জানান চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র যায়নি। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের দিয়ে জোর করে দ্বীপের সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ জয়নাল জানান, সকাল থেকে দ্বীপে বাতাস বেড়েছে। ফলে দ্বীপের চেয়ারম্যানসহ একটি দল মাইকিং করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন। এখনও মাইকিং চলছে, তবে কেউ সাড়া দিচ্ছে না।
দ্বীপের বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, সকাল থেকে দ্বীপে বাতাসের বেগ বেড়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসলেই দ্বীপের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটে। কেননা সাগরের মাঝেই আমাদের বসতি। এছাড়া আগের তুলনায় দ্বীপের অবস্থা ভাল না। সাগরে সামান্য পানি বাড়লে দ্বীপের চারদিকে ভেঙে যায়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় জেলার উপকূলীয় মানুষদের নিরাপত্তায় ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে মহেষখালী, কুতুবদিয়া, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিনসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।