
উদ্বোধনের আগেই টাইলসে ফাটল কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
পর্যটন শহর কক্সবাজারের ঝিলংজা এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ‘ঝিনুক’ আকৃতির দেশের একমাত্র আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা থেকে স্টেশনটিতে ট্রেন আসবে। তবে স্টেশনটির নির্মাণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সুত্র মতে, কক্সবাজার শহরতলীর ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর এই আইকনিক রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। আর ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান হয়েছে।
প্রকল্পের অধীনে থাকা অন্যান্য কাজও চলছে সমানতালে।
স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয়তলা ভবনটির বিভিন্ন অংশে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণাধীন আইকনিক ভবন ঘেঁষে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১২ মিটার প্রস্থের তিনটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। স্টেশনের পাশেই রেলওয়ের আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আটটি ভবনের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে।
স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিং ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারাদিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এই স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবেন। তবে স্টেশনের সামনে স্থাপিত ঝিনুকের ভাস্কর্যের পাশে লাগানো টাইলসে এখনই ভাঙ্গন ধরেছে।
স্টেশনে ঘুরতে আসা স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কক্সবাজারে এত সুন্দর একটি স্টেশন হয়েছে যার কারণে আমরা অনেক খুশি। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় দেখলাম লাগানো টাইলস ভেঙে গেছে। হয়ত নিম্নমানের টাইলস লাগানোতে এমনটা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়টিতে নজর দেয় তাহলে হয়তো জিনিসগুলো ঠিক করা যাবে।
এ বিষয়ে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, চলতি বছরই কক্সবাজার রেললাইনে আমরা ট্রেন চালাতে চাই। এ লক্ষ্যে প্রকল্প এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৮%। তবে স্টেশনে যদি কোন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয় সেটা অবশ্যই তদারকি করা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০০ কিলোমিটার রেলপথে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনসহ মোট স্টেশন থাকছে ৯টি। বাকি আটটি স্টেশন হলো সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদর ও উখিয়া।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকায়। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।