এডিসি হারুনকান্ডে আড়ালেই রইলেন সানজিদা
1 min read

এডিসি হারুনকান্ডে আড়ালেই রইলেন সানজিদা

ডেস্ক রিপোর্ট
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম

হারুন অর রশিদ এবং সানজিদা আফরিন নিপা। আলোচিত দুটি নাম। দুইজনই পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে পেটানোর দায়ে অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশিদকে। কিন্তু বহাল তবিয়তে রয়েছেন সানজিদা আফরিন। গণমাধ্যম থেকেও অনেকটা আড়ালে তিনি। অথচ এই গল্পের মূল নায়িকা তিনি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।

চাকরি জীবনের শুরু থেকেই একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে বারবার। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ ছিল কনস্টেবলের সঙ্গেও। সর্বশেষ গত শনিবার রাতে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটালে এডিসি হারুন অর রশিদের সঙ্গে থাকাবস্থায় ঘটে আলোচিত ঘটনাটি।

পুলিশ সদর দপ্তরে সানজিদার বিপি নম্বর অনুসারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে স্বামীর নাম হিসেবে লেখা রয়েছে মো. আজিজুল হক। যার পুরো নাম আজিজুল হক মামুন। তিনি একজন বিসিএস ক্যাডার। বর্তমানে রাষ্ট্রপতির এপিএস। অভিযোগ উঠেছে, স্বামীর অজান্তে ৩১ ব্যাচের এডিসি হারুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে তার।

বিষয়টি জানার পর থেকেই গোয়েন্দা তৎপরতা চালান মামুন। ঘটনার দিন খবর পেয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ছুটে যান ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মামুন। তারপরই একের পর এক বাগবিতন্ডা, হাতাহাতি থেকে একপর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে থানায় ধরে নিয়ে বেদম প্রহার করেন হারুন ও তার অধীনস্থরা। আড়ালে রয়ে যান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগের এডিসি সানজিদা আফরিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সানজিদা ও হারুনের বিয়ের পোশাক পরিহিত একটি ছবি।

সানজিদার ঘনিষ্ঠরা জানান, ছাত্র জীবনে বিয়ে হয়েছিল হারুন-সানজিদার। পরবর্তীতে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। কিন্তু এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। যদিও সানজিদা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

এডিসি হারুনকান্ডে আড়ালেই রইলেন সানজিদা

২০২১ সালের ৬ মে থেকে ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত গাজীপুর সদর সার্কেলে এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন সানজিদা। ওই সময়ে লিঙ্কন নামে এক কনস্টেবলের সঙ্গে তার বেশ সখ্য ছিল। জেলা পুলিশ সদস্যদের কাছে মজাদার আলোচনার বিষয় ছিল এই জুটি। বিষয়টি গড়ায় তৎকালীন গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার শফি উল্লাহ পর্যন্ত। লিঙ্কনের স্ত্রী ডেলিন এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

সূত্রমতে, ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, লিঙ্কনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সানজিদা আফরিন। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি শুরু হয়েছে। ঠিকমতো তাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না লিঙ্কন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। যথাযথ প্রমাণ না থাকায় লিখিত অভিযোগ পরিবর্তন করতে হয় ডেলিনকে। এতে সানজিদার বিষয়টি বাদ দিতে হয়। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা আশ্বস্থ করেন, এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নন্দিতা মালাকারকে।

এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে চাননি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ ছিল। এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি ডিএমপিতে যোগদান করেন। অবশ্য তার আগে ২০১৬ সালের ৫ মে থেকে ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে ছিলেন সানজিদা আফরিন।

সূত্র জানায়, একই ব্যাচের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল সানজিদার। সম্পর্কের শুরুটা ২০১৪ সালে পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমি সারদা থেকে। বিষয়টি একপর্যায়ে বিয়ে পর্যন্ত গড়াতে চেষ্টা করেন সানজিদা। বিয়ের দাবিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন এই নারী। কিন্তু ওই প্রেমিক কর্মকর্তা হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।

এর মধ্যেই বিয়ে হয়েছে আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে। টাঙ্গাইলের গোপলাপুরের এম হোসেন আলীর মেয়ে সানজিদা আফরিন লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

হারুনের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে এডিসি সানজিদা আফরিন বলেন, না বিয়ে হয়নি। লিঙ্কনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনার কমনসেন্স কী বলে। তারপর পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ সদস্যদের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে কঠোর হচ্ছে এই বাহিনী। কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায় পুলিশ বাহিনী নেবে না।

এসব বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
সুত্র : ভোরের আকাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *