
কক্সবাজারে একদিনের ব্যবধানে বাড়লো করোনা রোগী, নতুন শনাক্ত ৭০ জন
আনছার হোসেন, কক্সবাজার
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
একদিনের ব্যবধানে কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবারও বেড়ে গেছে। গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ জন হলেও তার পরদিন বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। যদিও এই ৭০ জনের মধ্যে ৭ জন ফলোআপ রোগী রয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ৩৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। এদের মধ্যে সর্বাধিক ৪১ জন রয়েছেন কক্সবাজার সদর উপজেলার রোগী। অন্য ২৬৫ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে ‘নেগেটিভ’।
বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলায় একদিনে আক্রান্তের হার ২০ দশমিক ৯০ শতাংশ। তবে আক্রান্তের এই কক্সবাজার সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি।
এ নিয়ে কক্সবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৩৮৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার ৬৩৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের বিশ্বস্ত সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুত্র মতে, আজ বৃহস্পতিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে শনাক্ত হওয়া ৭০ জনের মধ্যে ফলোআপ রোগী আছেন ৭ জন। যাদের ফলোআপ টেষ্টেও রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। তবে এই দিন শনাক্ত হওয়া অবশিষ্ট ৬৩ জনের মধ্যে ৫৩ জন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। অন্য ১০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী।
অপরদিকে বুধবার শনাক্ত হওয়া ৪৯ জন রোগীর মধ্যে দুইজন পুরনো রোগী। যাদের ফলোআপ টেষ্ট করা হয়েছে। ফলোআপ টেষ্টেও তাদের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। তবে বুধবার শনাক্ত হওয়া অবশিষ্ট ৪৭ জনের মধ্যে ৪৬ জন কক্সবাজার জেলার রোগী। যাদের মধ্যে ৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। এছাড়া অবশিষ্ট একজন চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা।
এছাড়াও মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) শনাক্ত হওয়া ৮৮ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৬ জন আগে আক্রান্ত হওয়া পুরাতন রোগীর ফলোআপ টেস্ট রিপোর্ট। এছাড়াও ১০ জন রোগী চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার। তবে মঙ্গলবার করোনা শনাক্ত হওয়া অবশিষ্ট ৭২ জনের সকলেই কক্সবাজার জেলা রোগী। তাদের মধ্যে আবার রোহিঙ্গা শরণার্থী ৮ জন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আজ বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) একদিনে শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৪১ জন। এছাড়াও রামু উপজেলায় ৪ জন, উখিয়া উপজেলায় ১১ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৩ জন ও পেকুয়া উপজেলায় একজন রোগী রয়েছেন। তবে এ দিন জেলার চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলায় নতুন কোন রোগী শনাক্ত হয়নি।
তবে বুধবার (১৪ এপ্রিল) শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ১৮ জন, রামু উপজেলায় একজন, উখিয়া উপজেলায় ৬ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৪ জন, চকরিয়া উপজেলায় ৭ জন, পেকুয়া উপজেলায় একজন, মহেশখালী উপজেলায় ৫ জন রয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা রয়েছেন একজন রোগী।
তারও আগের দিন মঙ্গলবার একদিনে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৩৭ জন, রামু উপজেলায় ১ জন, উখিয়া উপজেলায় ১০ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৫ জন, চকরিয়া উপজেলায় ৩ জন, পেকুয়া উপজেলায় একজন এবং মহেশখালী উপজেলার ৭ জন রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ৭ হাজার ৩৮৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শুধু কক্সবাজার সদর উপজেলার রোগী আছেন ৩ হাজার ৬৩৯ জন। যা মোট করোনা রোগীর প্রায় অর্ধেক।
অপরদিকে গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৮ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী।
জেলায় আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার মাত্র ১.২৩ শতাংশ।
সুত্র মতে, গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬ হাজার ১২৮ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৮৪.৯৮ শতাংশ।
আক্রান্তদের মধ্যে গত ১২ এপ্রিল পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৭৭৮ জন, প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রয়েছেন ১৫৯ জন। তাদের মধ্যে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে রয়েছেন ৬০ জন, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ জন, কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বাহারছড়া ফ্রেন্ডশীপ SARI হাসপাতালে রয়েছেন ১৬ জন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আইসোলেশন সেন্টার সমুহে রয়েছেন স্থানীয় জনগণ ৫৮ জন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন ২১ জন।