
কঠোর লডকাউনেও কক্সবাজারে বাড়ছে করোনা, তিনদিনে শনাক্ত ১৮৬ জন
আনছার হোসেন, কক্সবাজার
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
সারাদেশের মতো পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারেও কঠোর লকডাউনের মাঝেই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এই জেলায় গত তিনদিনে (২০-২২ এপ্রিল) ১৮৬ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও ১৮ জন পুরাতন রোগীর ফলোআপ বিপোর্টে আবারও ‘পজিটিভ’ এসেছে। এই তিনদিনে বরাবরের মতোই কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৮৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে তিনদিনে এক হাজার ৭১৬ জন সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এতো সংখ্যক নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার একজন ও পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুইজন রোগী আছেন।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অনুপম বড়ুয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে গেল তিনদিনে এক হাজার ৫১২ জন রোগীর রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ সুত্র মতে, এই তিনদিনে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৮৭ জন, রামু উপজেলায় ৮ জন, উখিয়া উপজেলায় ৪৫ জন, টেকনাফ উপজেলায় ১৯ জন, চকরিয়া উপজেলায় ১০ জন, পেকুয়া উপজেলায় ৩ জন, মহেশখালী উপজেলায় ৫ জন, কুতুবদিয়া উপজেলায় একজন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী আছেন।
সুত্র মতে, দিনওয়ারি হিসাবে দেখা যায়, ২০ এপ্রিল ৫৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে। এদের মধ্যে ৬৪ জন নতুন রোগী ও ৯ জন পুরাতন রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ৩৬ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ১১ জন, টেকনাফে ৫ জন, চকরিয়ায় ৪ জন, পেকুয়ায় একজন ও মহেশখালীতে একজন। এদিন ৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) ৫৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ৬১ জন নতুন ও ৪ জন পুরাতন রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ২৮ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ১২ জন, টেকনাফে ৬ জন, চকরিয়ায় ৫ জন, পেকুয়ায় একজন, কুতুবদিয়ায় একজন ও মহেশখালীতে ৪ জন। এছাড়াও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার একজন রোগী আছেন। এ দিন রোহিঙ্গা কোন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) ৬৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্থিত্ব মিলেছে। এদের মধ্যে ৬১ জন নতুন রোগী ও ৫ জন ফলোআপ রোগী। তাদের মধ্যে কক্সবাজার সদরে ২৩ জন, রামুতে দুইজন, উখিয়ায় ২২ জন, টেকনাফে ৮ জন, চকরিয়ায় একজন ও পেকুয়ায় একজন। এছাড়াও পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুইজন রোগী আছেন। এ দিন দুইজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরেও করোনার অস্থিত্ব পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে কক্সবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৭৮৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার ৮৩১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের একাধিক সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় ৭ হাজার ৭৮৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৩ হাজার ৮৩১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা মোট করোনা রোগীর প্রায় অর্ধেক।
অপরদিকে গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কক্সবাজার জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৯০ জন। তাদের মধ্যে ১১ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী।