করোনাভাইরাস ৬,৬০০ বার রূপান্তরিত হয়েছে!
1 min read

করোনাভাইরাস ৬,৬০০ বার রূপান্তরিত হয়েছে!

ডেস্ক রিপোর্ট
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম

করোনাভাইরাসের যে রূপটি (কোভিড-১৯) করোনা মহামারি সৃষ্টি করেছে তা কমপক্ষে ৬ হাজার ৬০০ বার রূপান্তরিত হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের এজেন্সি ফর সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড রিসার্স-এর বায়ো-ইনফরমেটিক্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সেবাস্তিয়ান মুয়ারের-স্ট্রোহ এমন তথ্য দিয়েছেন। কেন এমন রূপান্তর ঘটেছে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। তা প্রকাশিত হয়েছে দ্য স্ট্রেইটস টাইমসে।

তিনি বলেন, যখনই নিজের প্রতিকৃতি সৃষ্টির সময় কোনো রকম একটি ভুল হয়ে যায়, তখনই এই ভাইরাস রূপান্তরিত হয়। এর ফলে তার জিনগত কোডে নতুন কিছু যুক্ত করা, কিছু বাদ দেয়া বা পরিবর্তন করতে পারে। তার এই ভুল তাকে আরো বেশি বেঁচে থাকার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। যখনই অধিক পরিমাণে ভুল হয়, ততই তার রূপান্তরিত রূপটি টিকে থাকার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। কখনো কখনো তা মূল ভাইরাসকে অতিক্রম করে যায়।

দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে উদ্ধৃত করে এসব কথা লিখেছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

ড. সেবাস্তিয়ান বলেন, এখানে উদাহরণ দেয়া যায়। ধরুন ডি৬১৪জি রূপান্তরের কথা। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এর বিস্তার লাভ দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের সব নমুনায় এই রূপান্তরটি পাওয়া যায়। করোনাভাইরাসের যেকোনো রূপান্তরই হোক না কেন, তাতে এই রূপান্তরিত ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। কারণ, এই ভ্যারিয়েন্টটি এত বেশি পরিব্যাপক যে, একে একটি পারিবারিক নাম দেয়া হয়েছিল এবং চিহ্নিত করা হয়েছিল জি বংশ হিসেবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্টে এই জি বংশীয় ভাইরাস অধিক হারে সংক্রমণ ঘটায় এবং ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ থেকে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হয় না। এমনকি তা চিকিৎসা পদ্ধতি বা কোনো টিকার কোনো ক্ষতি করতে পারে না।

ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে একে শ্রেণীকরণের বিষয়ে ড. মুয়ারের-স্ট্রোহ বলেছেন, কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে কমপক্ষে একটি বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয় রূপান্তরিত ভাইরাসকে। তার মধ্যে এই ভাইরাস যদি খুব সহজেই বিস্তার লাভ করতে পারে, অধিক ভয়াবহ অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে, এন্টিবডির নিষ্ক্রিয়করণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে, চিকিৎসার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, টিকা বা চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে, তাহলে একটি ভ্যারিয়েন্টকে শ্রেণীকরণ করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, সব রকম রূপান্তরিত ভাইরাস রোগের ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন করে না। ভ্যারিয়েন্ট সাধারণত ৫ থেকে ১৫ রকমের রূপান্তরের সমন্বয়। এসব মিলে একটি ভ্যারিয়েন্টকে অধিক সুবিধা দেয়।

তিনি আরও বলেন, ভাইরাসের যে স্ট্রেইন ভারতকে পর্যুদস্ত করে দিচ্ছে তাকে বর্ণনা করতে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ অথবা ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ ভ্যারিয়েন্ট শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। একে নামের ভুল প্রয়োগ বলে তিনি মনে করেন। প্রকৃতপক্ষে এসব ভ্যারিয়েন্টে আরো অধিক পরিমাণ রূপান্তর দেখতে পাওয়া যায।

তার মতে, সৌভাগ্য এই যে, বর্তমানে তিনটি ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ আছে। তবে প্রচুর ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ (ভিওআই) আছে। এসবের মধ্যে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্নের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ নেই এ বিষয়ে। এটা পরিবর্তিতও হতে পারে। এর মধ্যে দুটি ভ্যারিয়েন্ট আছে। তা প্রথমেই শনাক্ত করা হয় ভারতে। এই দুটি ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতে গত মাসে করোনা সার্জ দেখা দিয়েছে।

ড. মুয়ারের স্ট্রোহ-এর মতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম এই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস তার স্পাইক প্রোটিনে কমপক্ষে ৬ হাজার ৬০০ বার রূপান্তর ঘটিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *