
কক্সবাজারে প্রধান সড়কের নির্মাণকাজ শুরু, দেড়বছরেই কাজ শেষ করবে কউক
আনছার হোসেন, কক্সবাজার
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৪ মে) থেকে আবারও শুরু হয়েছে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের নির্মাণ কাজ। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল অব. ফোরকান আহমদ বিকালে সড়কটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রধান সড়কের নির্মাণ ও কর্মযজ্ঞ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
তিনি আশা করছেন, কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড় থেকে হাশেমিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত সড়ক অংশটি আগামি জুনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। এছাড়াও ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটি পুরোপুরি চলাচলের জন্য খুলে দিতে চান।
তিনি বলেন, শহরের আইবিপি রোডের মাথা থেকে হাশেমিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত সড়ক অংশটিতে নির্মাণ কাজ আগামি ডিসেম্বরের মধ্যে একটি বিশেষ পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে।
তাঁর মতে, প্রধান সড়ক প্রকল্পটির নির্মাণকালিন সময় তিন বছর হলেও তিনি চেষ্টা করছেন আগামি দেড়বছরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ শেষ করতে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহরের সৌন্দর্যবর্ধিত নাপিতা পুকুরের (বাজারঘাটা পুকুর) সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজারে কর্মরত প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
ওই প্রধান সড়ক নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক (পিডি) লে. কর্ণেল খিজির খান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর রাশেদ, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক সৈকত সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক কক্সবাজার এর পরিচালনা সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলামসহ সড়কটির নির্মাণ কাজের সাথে সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
কউক চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল অব. ফোরকান আহমদ শহরবাসি, সাংবাদিকসহ সকলের ইতিবাচক সহযোগিতার প্রত্যাশা করে বলেন, শহরের হলিডে মোড় থেকে বাসটার্মিনাল পর্যন্ত প্রধান সড়কটির নির্মাণ কাজ দুই ভাগে ভাগ করে শেষ করা হবে। দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এনডিই নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্টান শহরের মূল অংশ এবং তাহের ব্রাদার্স নামের আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্টান হাশেমিয়া মাদ্রাসা থেকে বাসটার্মিনাল পর্যন্ত সড়ক অংশটির নির্মাণ করবে।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, শহরের প্রধান সড়কের মূল অংশটি হবে ৫০ ফুট প্রশস্ত ও অবশিষ্ট অংশটি হবে ১০০ ফুট প্রশস্ত।
ফোরকান আহমেদ বলেন, কউক, সড়কের ডিজাইন প্রস্তুতকারি প্রতিষ্টান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের প্রকৌশলিরা যৌথভাবে সড়কটির নির্মাণ কাজের দেখভাল করছেন।
তবে তিনি স্বীকার করেন, পুরো শহরবাসিকে দুর্ভোগে ফেলা প্রধান সড়কটির নির্মাণ কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের কাজে তিনি যথেষ্ট গাফেলতি পেয়েছেন।
কউক চেয়ারম্যান তাঁর দুঃখের কথা উল্লেখ করে বলেন, শহরবাসির দূর্ভোগ লাঘবে কউক, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্টানের কর্মকর্তাদের যৌথ বোর্ড সভা একাধিকবার করা হয়েছে। নির্মাণ কাজ চলাকালিন সড়কে যানবাহন চলাচল যানজট মুক্ত রাখতে ‘সড়কটি ওয়ানওয়ে’ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। শহরের দক্ষিণ দিকের বিকল্প সড়কটি কিছুটা যানবাহন চলাচলের উপযোগী হলেও উত্তর পাশের বিকল্প সড়কটি চলাচলের উপযোগী নেই। কক্সবাজার পৌরসভাকে বলা হয়েছিল, সড়কটি অন্তত চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার জন্য। কিন্তু আজ (২৪ মে) জানানো হয়েছে, তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের শ্রমিকরা এখনও আসেনি। সড়কটি উপযোগী করতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন লাগতে পারে। তাই ঘোষণা দিয়েও প্রধান সড়কটির চলাচল ওয়ানওয়ে করা যায়নি।
তবে তিনি আশ^াস দিয়ে বলেন, আগামি দুইমাসের মধ্যে ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প থেকে খুরুস্কুল রাস্তার মাথা পর্যন্ত সড়ক অংশটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।
লে. কর্ণেল অব. ফোরকান আহমদ বলেন, আমি আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করছি, নির্মাণ কাজ চলাকালে সাধারণ মানুষের যেন কম ভোগান্তিতে ফেলা যায়। এজন্য দরকার সকলের আন্তরিক সহযোগিতা।
তিনি বলেন, প্রধান সড়কের নির্মাণকালিন যে অংশে কাজ চলবে সেই অংশে কোন গাড়ি যেন দাঁড় করিয়ে রাখা না হয়। এমনকি সড়কের পাশের হকারদেরও ওই সময়ে উঠে যাওয়া দরকার।
পরে তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি প্রত্যাশা করেন, সাংবাদিকরা লেখনির মাধ্যমে কউক’কে পরামর্শ দেবেন।
তাঁর মতে, সাংবাদিকরা লেখনি বন্ধ করে দিলে তাঁরাও (কউক) ঘুমিয়ে পড়েন!