
পরীমণিকে ‘ধর্ষণচেষ্টাকারি’ কে এই নাসির উদ্দিন মাহমুদ
ডেস্ক রিপোর্ট
বিসিবিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি ও ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ প্রায় চার দশক ধরে ডেভেলপার ব্যবসায় যুক্ত রয়েছেন।
দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নাসির উদ্দিন কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পদেও আছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেন। নাসির ও তার প্রতিষ্ঠান সরকারের গণপূর্ত অধিদফতর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি), শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর (ইইডি), রাজউক, রেলওয়েসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজ করেন।
নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) সাবেক নির্বাহী পরিষদের সদস্য। তিনি ২০১৫, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের উত্তরা ক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি এবং লায়ন ক্লাবের ঢাকা জোনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও নাসির জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর জাপার নবম কাউন্সিলে তিনি দলটির এই পদ পান।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রোববার রাত থেকে নাসিরের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সোমবার উত্তরার ১ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তারের পর গাড়িতে তোলার সময় নাসির সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘ঘটনার রাতে আমি যখন ক্লাব থেকে বের হই তখন পরীমণি ও তার বন্ধুরা ক্লাবে ঢোকেন। তারা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে উচ্ছৃঙ্খল ছিল। ক্লাবে ঢোকার পর আমাদের বারের কাউন্টার থেকে দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেয়ার চেষ্টা করেন তারা। তখন আমি তাদের কাছে গিয়ে বলি, আপনারা ড্রিংকসগুলা নিতে পারেন না। আমি তাদের বাধা দিই। তারপর আমি আমার সিকিউরিটিদের ডাক দিই। নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাদের নিয়ে যায়।’
ইতোপূর্বে রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। এরপর রাত সাড়ে ১০টায় তার বনানীর বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত জানান তিনি।
পরীমণির ভাষ্য মতে, ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুটি গাড়িতে করে উত্তরার উদ্দেশে বেরোন তারা। পথে অমি নামের সঙ্গীদের একজন দুই মিনিটের কাজের কথা বলে তাদের বোট ক্লাবে নিয়ে যান। এ সময় পরীমণির সঙ্গে তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিও ছিলেন। ক্লাবের ভেতরে পরীমণিকে নির্যাতন করার সময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে জিমিও হামলার শিকার হন। এই জিমির মাধ্যমে বছর দুয়েক আগে অমির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল পরীমণির।
এদিকে এই ঘটনায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সোমবার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের নামে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন পরীমণি। পরে দুপুরে ডিবি পুলিশের একটি টিম উত্তরা থেকে নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ (৬৫) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া বাকিরা হলেন তুহিন সিদ্দিকী অমি (৩৩), লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)।